রোহিঙ্গাদের কারণে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে নানান অপরাধে। কক্সবাজারবাসী রোহিঙ্গাদের নিয়ে চরম অস্বস্তিকর অবস্থায় রয়েছে। সম্প্রতি রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরব জেলাবাসী। মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুহারা কক্সবাজারে ক্যাম্পে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা এবং পূর্ব থেকে জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের কারণে জেলাবাসী দীর্ঘদিন ধরে চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
সচেতন মহলের দাবি, রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে মাদক ও অস্ত্রের ঝনঝনানি এখন নিত্যনৈমিত্যিক ব্যাপার। প্রতিদিন কোন না কোন ঘটনা ঘটাচ্ছে তারা। ক্যাম্পগুলোতে সশস্ত্র তৎপরতা, মানবপাচার, চাঁদাবাজি, অপহরণের মতো ঘটনা ঘটছে প্রতিদিন। যেকোন কারণেই রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার করছে। তাদের নিজেদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারগুলো নিয়েও জেলাব্যাপী আতংক সৃষ্টি হয়। এমনকি ক্যাম্পে বসেও ইয়াবাসহ মাদক ব্যবহার বাড়াচ্ছে ওরা। ওদের কারণে ভয়ভীতি সৃষ্টি হচ্ছে পর্যটন নগরীর মতো জেলা কক্সবাজারে।
নির্ভরযোগ্য তথ্য সূত্রে জানা গেছে, রোহিঙ্গারা বর্তমানে ক্যাম্পে মাদক ব্যবসা, হত্যা, গুম, ধর্ষণ, মানবপাচার, ডাকাতি, অপহরণসহ নানান ঘটনার সাথে জড়িত হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের এসব অপ-তৎপরতা রুখতে গিয়ে একপ্রকার হিমশিম খাচ্ছে আইন-শৃংখলা বাহিনীও। এদের অপ-তৎপরতা ও নানান অপরাধের কারণে মাত্রাতিরিক্তভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে রোহিঙ্গা সংক্রান্ত মামলা। রোহিঙ্গাদের কারণে সৃষ্ট মামলায় নির্ধারিত সময়ের পূর্বে আসামীর পক্ষে জামিন চাওয়ায় মামলাজট বাড়ছে বলেও জানা গেছে।
এদিকে সিনিয়র জেলা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল স্বাক্ষরিত এক তথ্যে জানা গেছে, “রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রোহিঙ্গারা মাদক ব্যবসা, হত্যা, গুম, ধর্ষণ, মানবপাচার, ডাকাতি, অপহরণসহ নানাবিধ জঘন্যতম অপরাধমূলক কাজে লিপ্ত হচ্ছে। এতে উক্ত এলাকার পাশে পাশে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভীতিসহ জনজীবনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। আইন-শৃংখলা বাহিনী কর্তৃক রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে আইন-শৃংখলা রক্ষায় ও অপরাধ দমনে হিমশিম খাচ্ছেন। দিন দিন তাদের অপরাধ কর্ম বৃদ্ধি পাচ্ছে। তৎপ্রেক্ষিতে তাদের বিরুদ্ধে মাদক, হত্যা, গুম, ডাকাতি, অপহরণসহ বিভিন্ন অপরাধের বিরুদ্ধে মাত্রাতিরিক্ত মামলা হচ্ছে।”
ওই তথ্যে আরও জানানো হয়, রোহিঙ্গাদের নামীয় হত্যা, অপহরণ, মাদক, ডাকাতি মামলাসহ অন্যান্য মামলায় তদন্তের নির্ধারিত সময়ের পূর্বে জামিনের বিষয়ে তদবীর না করে তদন্ত কার্যে সহযোগিতা করা সংশ্লিষ্ট সকলের নৈতিক দায়িত্ব। উল্লেখিত মামলা সমূহের আসামীর পক্ষে ফৌজদারী মিস মামলা মূলে জামিন বিষয়ে কোন আদেশ প্রচারিত হলে তৎপরবর্তীতে একই আসামীর জামিনের জন্য ৪ মাসের মধ্যে ভিন্ন কোন ফৌজদারী মিস দরখাস্ত দাখিল করা থেকে বিরত থাকার জন্য জানিয়েছেন তিনি। যদি করা হয় তাতে বিচারক শুনানি কাজে ওভারলোডেড হয়ে স্বাভাবিক মামলা নিস্পত্তিতে বিঘ্ন হচ্ছে।
এবিষয়ে সকলের জ্ঞাতার্থে ও কার্যার্থে বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ, বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ, ১ম/২য় আদালত, কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক এবং কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নোটিশ বোর্ডের এবিষয়ে সতর্ক থাকার আহবান জানিয়েছেন ওই তথ্যে। সুত্র: দৈনিক কক্সবাজার
পাঠকের মতামত